কোন ব্যাক্তি কে আইনগত ভাবে যে ক্ষমতা প্রদান করা হয় তাকে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বলে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অর্থ এমন দলিল যাহার মাধ্যমে কোন ব্যাক্তি তাহার পক্ষে উক্ত দলিলে বর্ণিত কার্য-সম্পাদনের জন্য আইনানুগভেবে অন্য কোন ব্যাক্তির নিকট অর্পণ করেন। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামার মাধ্যমে কোন ব্যাক্তিকে ক্ষমতা প্রদান করা যার মাধ্যমে কোন কাজ সম্পাদন করে দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে ক্ষমতা প্রদান করা। বিভিন্ন কারনে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল সম্পাদন করতে হয়। আপনার কিছু সম্পত্তি রয়েছে বাংলাদেশে । আপনার এই সম্পত্তি বিক্রয় করা প্রয়োজন কিন্তু আপনি বাংলাদেশে আসতে পারছেন না । এমন ক্ষেত্রে আপনি চাইলে যে কোন ব্যাক্তিকে আপনার সম্পত্তি বিক্রয় বা দেখা-শুনার দায়িত্ব দিতে পারেন। শুধুমাত্র জমিজমার ক্ষেত্রে নয় যে কোন বিষয় আপনার অনুপস্থিতে কাজ সম্পাদন ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করা কখন প্রয়োজন

বাংলাদেশের অনেক মানুষ বিভিন্ন পেশায় ও কর্মের প্রয়োজনে বিদেশে অবস্থান এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকেন। কিন্তু তাদের অনেক সম্পত্তি, ভূমি,ফ্ল্যাট,বাড়ী-ঘর বাংলাদেশে রয়েছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা,ভূমির উন্নয়ন,হস্তান্তর,বিক্রয়,বন্ধক দান ,ভূমির উপর ফ্ল্যাটবাড়ী কিংবা আবাসিক বা বাণিকজ্যিক ভবন নির্মাণে বা নির্মানের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার এর সাথে চুক্তি , জমিজমা নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা পরিচালনা সহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে আসার প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশে আসতে পারছেন না।

তখন চাইলে আপনি অন্য কোন ব্যাক্তিকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে আপনার অনুপস্থিতে কাজ সম্পাদন ক্ষমতা প্রদান করতে পারেন। এক্ষত্রে আপনি বাংলাদেশে না এসে আপনার প্রয়োজনী কাজ সম্পাদন করতে পারছেন এবং বিদেশে অবস্থান করে আপনি অন্য কোন ব্যাক্তিকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা ক্ষমাতা অর্পন করতে পারছেন।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির প্রকারভেদঃ

ব্যাবহারিক দিক থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা মোক্তারনামাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা-

 খাস মোক্তারনামা ( Special Power of Attorey)

যে মোক্তারনাম দ্বারা বিষেশভাবে নিদ্দিষ্ট কোন কার্য করিবার ক্ষ্মতা অর্পণ করা হয় উহাকে খাস মোক্তারনামা বলা হয়। খাস মোক্তারনামা দিয়ে একটি মাত্র লেনদে সংক্রান্ত এক বা একাধিক দলিলের নিবন্ধন লাভের জন্য ক্ষমতা প্রদান করা হয়। খাস মোক্তারনামায় একটি মাত্র ক্ষমঅতা প্রদান করা হয় । অর্থাৎ  একটি খাস মোক্তারনামার বলে একটি দলিল রেজিস্ট্রী করতে পারবে তবে একটি মাত্র বিষয় সম্পর্ন করতে গিয়ে যদি একাধিক দলিল  রেজিস্ট্রী করার প্রয়োজন হয় তাহলে ,ঐ খাস মোক্তারনামা দ্বারাই সম্পর্ন করা যাবে।

সাধারন মোক্তারনামা বা আমমোক্তারনামা (General Power of Attorey)

আমমোক্তারনামার মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয় এবং খাসমোক্তারনামার মাধ্যমে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়। স্ট্যাম্প আইন অনুযায়ী, যে দলিল দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষে হাজির হয়ে কাজ করার ক্ষমতা প্রদান করা হয় তাকে ‘আমমোক্তারনামা দলিল’ বলে।

অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নিঃ

অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অর্থ স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে, বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন বা ঋন গ্রহনের বিপরীতে স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক গ্রহনের জন্য কোন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অথবা স্থাবর সম্পত্তির বিপরীতে পণ মূ্ল্য গ্রহণের বিনিময়ে ভূমি উন্নয়ন সহ উক্ত দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা প্রদান সম্পর্কি কোন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি কিভাবে করবেন

আপনি যে দায়িত্ব বা ক্ষমাতা অর্পন করবেন তা হতে হবে লিখিত। কাকে মোক্তার নিয়োগ করা হলো সে যে সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা,ভূমির উন্নয়ন,হস্তান্তর,বিক্রয়, খাজনা,বন্ধক দান করবেন তা লিখতে হবে। মোক্তার কি করতে পারবে এবং কি করতে পারবে না স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। পাওয়ার দাতা ও গ্রহিতার ছবি সংযুক্ত করা ,তার ক্ষমতার মেয়াদ নির্ধারণ এবং প্রয়োজনে ক্ষমতার মেয়াদ বৃদ্ধি উল্লেখ লিখতে হবে ।

ভূমি ব্যবস্থাপনা,ভূমির উন্নয়ন,হস্তান্তর,বিক্রয়,বন্ধকদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা ক্ষমতা অর্পন ক্ষত্রে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন আইন,১৯০৮ এর আওতায় বাধ্যতামূলকভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন,২০১২ এর ৬( ১) ধারায় বলা হয়েছে রেজিস্ট্রেশন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন ,এই আইনের অধীন সম্পাদিত অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। 

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির জন্য যে সকল বিবরণ অন্তভূর্ক্ত করতে হবে-

পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে ক্ষমতা অর্পনের ক্ষেত্রে ইহাতে নিম্নবর্ণিত সকল বিষয় বা প্রয়োজনীয় বিষয়ের বিবরণ অন্তভূর্ক্ত করতে হবে যথা-

১। পাওয়ারদাতার উদ্দেশ্য ।

২। পাওয়ার গ্রহীতার দায়িত্ব,ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা ।

৩। পাওয়ার অব অ্যাটর্নির নিদ্দিষ্ট মেয়াদ।

৪। প্রদিয় ক্ষমতা শর্তাধীন হলে সেই শর্তের সুস্পষ্ট বিবরণ ।

৫। ক্ষমতা প্রদানের বা নির্বাহের বিবরণ, যদি ইহা একাধিক ব্যাক্তি কর্তৃক যৌথভাবে বা পৃথক ভাবে সম্পাদিত হয় ।

৬। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ের বিবরণ।

৭। স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণ

৮। রেজিস্ট্রেশন আইনের ধারা ৫২ (ক) তে বিধৃত বিষয়ের বিবরণ , প্রযোজ্য ক্ষেত্রে।

পাওয়ার দাতা বিদেশে অবস্থান করলে

বিদেশে বসবাস বা অবস্থানরত কোনো ব্যক্তি কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে চাইলে দূতাবাসের মাধ্যমে দলিল সম্পন্ন ও প্রত্যয়ন করে পাঠাতে হবে। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা সত্যায়িত করাতে হবে।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন,২০১২ এর ৬(৬) ধারায় বলা হয়েছে বিদেশে সম্পাদিত অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল বাংলাদেশে প্রথম প্রবেশের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রমাণীকরণ অন্তে উহা কালেক্টর কর্তৃক প্রয়োজনীয়রুপে স্ট্যাম্পযুক্ত করিতে হইবে। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি স্ট্যাম্পযুক্ত হওয়ার পর উহার একটি কপি কালেক্টর কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রারের নিকট প্রেরণ করবেন। সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রার ১নং বহিতে নথিভুক্ত করিয়া সংরক্ষের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

যে সকল ক্ষেত্রে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া যায় না

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা,২০১৫ এর বিধি ৪ অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত বিষয়ে ক্ষমতা অর্পণ করা যায় না যথা-

১। উইল সম্পাদন বা দাতা কর্তৃক সম্পাদিত উইল নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে দাখিলকরণ

২। দত্তক গ্রহণের ক্ষমতাপত্র বা দাতা কর্তৃক সম্পাদিত দত্তক গ্রহণের ক্ষমতাপত্র নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে দাখিল করন

৩। দান ও হেবা সম্পর্কিত ঘোষনা

৪। ট্রাস্ট দলিল সম্পাদন এবং

৫। সরকার কর্তৃক, সাধারন বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ,ঘোষিত অন্য প্রকার দলিল বা কার্য সম্পাদন।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিল করণ

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল বাতিল করা যায়। যে কোন সময় সাধারন মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বাতিল করতে পারবে। এ ছাড়া নোটারির মাধ্যমে করা মোক্তারনামা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমেই বাতিল করতে হবে। সাধারণ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অবসানের ক্ষেত্রে দাতা ক্ষমতা গ্রহীতাকে রেজিস্টার্ড ডাকের মাধ্যমে ৩০ দিনের নোটিশ দিয়ে প্রদত্ত ক্ষমতার অবসান ঘটাতে পারবে। তা ছাড়া ক্ষমতা গ্রহীতাও একইভাবে মালিককে ৩০ দিনের নোটিশ সাপেক্ষে অ্যাটর্নির দায়িত্ব ত্যাগ করতে পারে।

আবার যে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সেই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল বাতিল করার আবেদন করতে হবে। আবার পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল নিদ্দিষ্ট সময় এর জন্য করা হলে সেই নিদ্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ার পর তা বাতিল বলে গন্য হবে। যদি কোন নিদ্দিষ্ট কাজ সম্প্রাদনের জন্য ক্ষমতা অর্পণ করা হয় সেই নিদ্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের পর তা বাতিল বলে গন্য হবে।

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইনে বিরোধ নিষ্পত্তি

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন,২০১২ এর ১৩(১) ধারায় বলা হয়েছে

১। রেজিস্ট্রেশন আইনের অধীনে রেজিস্ট্রিকৃত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অধিনে কোন বিরোধ দেখা দিলে পক্ষগণ প্রথমে নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন।

২। পক্ষগণ তাদের নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে না পারলে একপক্ষ বিবাদমান বিষয়টি একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থাকারীর মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য অপরপক্ষকে নোটিশ প্রদান করবেন।

৩। নোটিশ প্রাপক উক্ত নোটিশ পাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ প্রেরকের সাথে যৌথভাবে মধ্যস্থাকারীর নিয়োগ করবেন

৪। পক্ষগণ কর্তৃক নিয়োগকৃত মধ্যস্থাকারীর সিদ্ধান্ত পক্ষগণসহ তাহাদের মাধ্যমে বা দাবীদার যে কোন ব্যাক্তির উপর বাধ্যকর হইবে এবং উহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোণ পক্ষের আপত্তি উত্থাপনের অধিকার থাকবে না ।

 মধ্যস্থাকারীর করণীয়

পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বিধিমালা,২০১৫ এর বিধি ১৬ বলা হয়েছে “পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইন,২০১২” এর ১৩(৩) ধারার অধিনে নিযুক্ত মধ্যস্থাকারী-

১। নিয়োগপ্রাপ্তির ২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে সকল বিবদমান পক্ষের উপস্থিতে কোন নিরপেক্ষ স্থানে একটি মীমাংসা বৈঠকের উদ্যেগ গ্রহন করবেন এবং বিরোধের বিষয়বস্ত সম্পর্কে অনুসন্ধান করবেন ।

২। উপরোক্ত বৈঠক অনুষ্ঠানের পর পরবর্তী ৪(চার) সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষগনের সহিত যৌথভাবে বা প্রয়োজনে পৃথকভাবে যোগাযোগ করে মৌখিক শুনানী এবং দালিলিক প্রমানাদির ভিত্তিতে বিরোধ মীমাংসার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

৩। উল্লেখিত কার্যক্রম সফল হয়ার পর পর্বরতী ২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে বিরোধের প্রকৃতি অনুসারে মীমাংসা সম্পর্কিত একটি লিখিত খসড়া প্রস্তুত করবেন,যাহাতে বিরোধ মীমাংসার নিয়ম ও শর্তসমূহ উল্লেখ থাক।

৪। প্রস্তুতকৃ্ত মীমাংসা চুক্তি অবিলম্বে বিবদ্মান পক্ষগণকে প্রদান করবেন এবং মীমাংসার চুক্তি বা দলিলে বর্ণিত শর্তসমূহ পক্ষগণ চূরান্ত করবেন।

৫। মীমাংসার চুক্তিপত্র দলিল বা দলিল আইনের স্ট্যাম্প অনুসারে স্ট্যাম্পযুক্ত করিয়া উহাতে সংশ্লিষ্ট পক্ষ অ সাক্ষীর স্বাক্ষর গ্রহণপূর্বক নিজ স্বাক্ষর প্রদান করবেন এবং রেজিস্ট্রেষন আইনের অধীনে নির্ধারিত সময়ের মাঝে নিবন্ধনের উদ্দেশ্য সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে দাখিল করবেন।

৬। এই বিধির অধীন পরিচালিত মীমাংসা কার্যক্রমের ব্যর্থতায় সংশ্লিষ্ট যে কোন পক্ষ বিবদমান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে ।

৭। এই বিধি মোতাবেক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহন ব্যতীত উপযুক্ত কোন আদালতে বিরোধ নিষ্পত্তির মামলা দায়ের করতে পারবেন না।

কোন প্রশ্ন বা আইনী সহায়তার জন্য, আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ-ই-মেইল:  info@counselslaw.com  ফোন: +8801700920980 +8801947470606, ঠিকানা: বাড়ি-৩৯, রোড- ১২৬ (তৃতীয় তল) ইসলাম ম্যানশন, গুলশান ১, ঢাকা।

Call Now

error: Content is protected !!