সর্বনিম্ন ২ জন এবং অনাধিক ৫০ জন মিলে একটি দেশী প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে পারবে। সল্প মূল্ধন এবং অতি সহজে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করা যাই বলে দিন দিন এটি ব্যবসায়ীদের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করার প্রক্রিয়া সমূহ হলঃ

ধাপ-১: নামের ছাড়পত্র

ধাপ-২: মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন

ধাপ-৩: আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন

ধাপ-৪: আরজেএসসি এর রেজিস্ট্রিকরণ

ধাপ-৫:  সার্টিফিকেট অফ ইন-কর্পোরেশন

ধাপ-৬:  টি.আই.এন (TIN)

ধাপ-৭:  ট্রেড লাইসেন্স

ধাপ-৮: নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলা

ধাপ: নামের ছাড়পত্র:

বাংলাদেশে একটি নতুন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করার জন্য আপনার প্রথম কাজটি হলো আপনার কোম্পানির জন্য সুন্দর একটি নাম ঠিক করা। প্রস্তাবিত কোম্পানির নামটির জন্য একটি  নাম ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নেওয়া।কোম্পানির নাম নিবন্ধন করার জন্য RJSC এর ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নামে একটি একাউন্ট করে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিয়ে নাম ক্লিয়ারেন্স এর  জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার পর আপনাকে একটি ব্যাংক পেমেন্ট স্লিপ প্রদান করা হবে যেটি দিয়ে আপনি নির্ধারিত ব্যাংকে নামের ছাড়পত্রের জন্য সরকারী ফি ৳ ২০০/- (দুইশত টাকা) এবং ভ্যাট ৳ ৩০/- (ত্রিশ টাকা)  জমা প্রদান করতে পারবেন। জমা প্রদানের পর আপনার ইউজার আইডিতে পুনরায় লগ-ইন করুন। আপনার অ্যাকাউন্টে  লগ ইন করলে নামের একটি ক্লিয়ারেন্স সনদ পাবেন। সাধারন্ত আবেদনের  দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নাম ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।

ধাপ: মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন

অনেক গুলো কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর এবং অনেক গুলো ধাপ অতিক্রম করার পর একটি কোম্পানি জন্ম লাভ করে। একটি কোম্পানি গঠন করতে অপরিহার্য দুটি বিষয় প্রস্তুত করতে হয়। এর একটি হলো মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন এবং অপরটি হলো আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন। কোম্পানির নাম, অফিসের ঠিকানা,কোম্পানির লক্ষ্য ও উদ্দ্যশ্য সাধারন্ত মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন  উল্লেখ থাকে। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে,আপনি যদি ব্যাংক, আর্থিক সংস্থান, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল করতে চান তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদনের নেওয়া প্রয়োজন হবে।

ধাপ: আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন:

আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর মাধ্যেমে একটি কোম্পানি পরিচালনা করা হয়। আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন হলো একটি কোম্পানির সংবিধান বা প্রান। কোম্পানি কখন থেকে শুরু হবে এবং কিভাবে শুরু হবে। কোম্পানির চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ম্যনেজার তাদের নিয়গ, ক্ষমতা ও কার্যাবলী লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। এছাড়াও  কোম্পানির মুল্ধন কত হবে,শেয়ার কত হবে এবং তা কিভাবে হস্তান্তর করা যাবে ,কোম্পানির সিল, বাৎসরিক সভা, হিসাব, কোম্পানীর অবসায়ন সহ যাবতীয় বিষয়াবলী লিপিবদ্ধ থাকে কোম্পানীর আর্টিকেল অব এসোসিয়েশনে। শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সর্বনিম্ন কোরাম কী হবে তা লিপিবদ্ধ করতে হবে। কোম্পানী পরিচালনার জন্য তো বটেই, তাছাড়া জয়েন্ট স্টক অব কোম্পানি ও কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন এর সময়ও কোম্পানীর মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন এবং আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন দাখিল করতে হয়।

ধাপ : আরজেএসসি এর রেজিস্ট্রিকরণ:

আরজেএসসি এর নিবন্ধন জন্য আরজেএসসি’র ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি দাখিল করতে হবে যেমন মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর কপি। মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন সহ অন্যান্য কাগজ পত্রাদি আর আরজেএসসি’র ওয়েবসাইটে বর্ণিত নির্ধারিত ফরম্যাট মেনে প্রস্তুত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রাদি দেওয়ার পর আরজেএসসি হতে একটি জমা রশিদ প্রদান করা হবে তা নির্ধারিত ফী দিয়ে ব্যাংকে পরিশোধ করুন করতে হবে ।   

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং তথ্য:  

কোম্পানি গঠন করার জন্য যে সকল কাগজ পত্রাদি নথি এবং তথ্য প্রয়োজন তা নিম্নরূপ:

১.পরিচালকদের বিবরন যেমন নাম, পিতা -মাতার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ইমেল আইডি, মোবাইল নম্বর।

২.ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর নাম

৩.চেয়ারম্যানের নাম

৪.এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র)

৫.টি.আই. এন (TIN)

৬.সমস্ত শেয়ার হোল্ডারদের ছবি (১ কপি)

৭.কোম্পানির ঠিকানা

নিবন্ধকরণের জন্য সরকা্রি ফী:

এটি কোম্পানির অনুমোদিত মূলধনের উপর নির্ভর করে সরকারি ফী। উদাহরণস্বরূপ, অনুমোদিত মূলধন যদি ৫০ লক্ষ হয় তবে সরকারী ফি ১৫% ভ্যাট সহ ১৩৫৭০ টাকা।

ধাপ: সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন:

উল্লিখিত সমস্ত সার্টিফিকেট পাওয়ার পরে,” আরজেএসসি” মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর কপি সহ সমস্ত তথ্য যাচাই বাছাই করবে এবং ব্যাংক একটি এনক্যাশমেন্ট সার্টিফিকেট যাচাই করবে। সমস্ত তথ্যে সন্তুষ্ট হওয়ার পরে আরজেএসসি কোম্পানির নামে ইন-কর্পোরেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করবে।

ধাপ:  টি.আই.এন (TIN)

কোম্পানির ইন-কর্পোরেশন সার্টিফিকেট পাওয়ার পর, ট্যাক্স সনাক্তকরণ নম্বরের (TIN) জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনআরবি) কাছে আবেদন করা প্রয়োজন। আবেদন পাওয়ার পরে, কোম্পানির নামে একটি ট্যাক্স সার্টিফিকেট ইস্যু করবে।

  ধাপট্রেড লাইসেন্স

ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনে একটি আবেদন করতে হবে । আবেদনের পাশাপাশি, নিম্নলিখিত তথ্যগুলি জমা দেওয়া দিতে হবে।

১. মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন এর ফটোকপি

২.ম্যানেজিং ডিরেক্টর অথবা চেয়ারম্যানের এর পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৩. কোম্পানির টি.আই.এন (TIN) নাম্বার

৪. অফিস ভাড়ার চুক্তিনামা

৫. ব্যবসার ধরন

৬.ইন-কর্পোরেশন সার্টিফিকেট

৭.এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র)

সাধারণত আবেদনের ৩ থেকে ৪ কার্য দিবসের মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স পেতে সময় লাগতে পারে।

ধাপ: নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলা

আপনার কোম্পানির জন্য একটি বাংক একাউন্ট খোলা এই ধাপটি খুবই সাধারন । এই ধাপে এসে যা করতে হবে সেটা হচ্ছে আপনার প্রস্তাবিত কোম্পানির নামে বাংলাদেশের যে কোন একটি ব্যাংকের এর অধিনে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে।

বাংক একাউন্ট খোলার জন্য যে নথি গুলি জমা দেওয়া দরকার তা হলো:

১. নাম ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের ফটোকপি

২. মেমোরান্ডাম এবং আর্টিকল অফ এসোসিয়েশন এর খসড়া

৩. কোম্পানির টি.আই.এন (TIN)

৪. পাসপোর্ট সাইজের ছবি

৫. এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র)

৬.ইন-কর্পোরেশন সার্টিফিকেট

উপরোক্ত দলিলগুলি পাওয়ার পরে, ব্যাংকটি কোম্পানির নামে একটি অস্থায়ী অ্যাকাউন্ট খুলবে।

আইনি পরামর্শের জন্য:

একটি নতুন দেশী প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করার জন্য আইনি পরামর্শের জন্য সিএলপি (CLP)এর সাথে যোগা্যোগ করতে পারেন। সিএলপিতে (CLP) লিগ্যাল টিম কোম্পানি গঠনের প্রক্রিয়া সহ অন্যান সকল আইনগত সহায়তা, পরামর্শ প্রদান করে থাকে। কোন প্রশ্ন বা আইনী সহায়তার জন্য, আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ-ই-মেইল: info@counselslaw.com, ফোন: +8801700920980 +8801947470606, ঠিকানা: বাড়ি-৩৯, রোড- ১২৬ (তৃতীয় তল) ইসলাম ম্যানশন, গুলশান ১, ঢাকা।                       

Call Now

error: Content is protected !!